রাজ্যে তৃণমূল সরকার ক্ষমতায় আসে ২০১১ সালে, তার তিন বছরের মাথায় অর্থাৎ ২০১৪ সালের টেট পরীক্ষা হয়েছিল। সফলভাবে পরীক্ষা দেওয়ার পর শিক্ষকতার চাকরি পেয়েছিলেন প্রায় ৫৯,০০০ এর কিছু বেশি প্রার্থী। ২০২৬ ও ২০২০ সালে নিয়োগ করাও হয়েছিল। আর এবার তাঁদেরই নিয়োগ বাতিল করার পথে হাঁটল কলকাতা হাইকোর্ট।
কিন্তু হঠাৎ কেন এত কড়াকড়ি পদক্ষেপ! কোন বিপদে রাজ্য সরকারি শিক্ষকেরা! সবটা ভেবে কিছু শর্ত ও নিয়মও বেঁধে দেওয়া হয়েছে। ওই শর্তগুলো মেনে যদি কাজ এগিয়ে যায়, তাহলে হয়ত চাকরিটা বাঁচতে পারে। এমনটাই জানানো হয়েছে এদিন।
কেন বাতিল হবে প্রাইমারির ৫৯ হাজার শিক্ষক নিয়োগ?
সম্প্রতি, নিয়োগ প্রক্রিয়ায় অনিয়মের অভিযোগের ভিত্তিতে মামলা উঠেছিল কলকাতা হাইকোর্টের বেঞ্চে। সেখানেই মামলাকারী প্রার্থীদের প্রতিনিধিত্বকারী আইনজীবী বলেছিলেন যে তাঁরা চান যে সমস্ত নিয়োজিত প্রার্থীর ওএমআর শীট আদালতে দেখানো হোক।
রাজ্য প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদও বলেছে যে অনেক ক্লায়েন্টই ১৫০ নম্বরের লিখিত পরীক্ষায় ফেল করার পরেও নিয়োগে কারচুপি করে চাকরি পেয়েছে। তাই নিয়োগে যাতে স্বচ্ছতা বজায় থাকে তাই কর্তৃপক্ষ চায় যাতে সমস্ত পরীক্ষার্থীর ওএমআর শীটের স্ক্যান করা কপি হাইকোর্টে পেশ করা হয়।
Read More: 4660 শূন্যপদে ভারতীয় রেলে চাকরি, মাধ্যমিক পাশে আবেদন চলছে
কোন শর্তে নিয়োগ বাতিল হবে না?
২০১৪ সালের পরীক্ষার ভিত্তিতে যে নিয়োগ করা হয়েছিল, সেই পরীক্ষায় অংশগ্রহণকারী প্রার্থীদের ওএমআর শিট এর হার্ড কপি নাকি মুছে ফেলা হয়েছিল। এমনটাই জানিয়েছে পর্ষদ। তবে ডিজিটাল ভার্সনে সেই ডেটার কোনও ক্ষতি হয়নি।
এই ডেটার ভিত্তিতেই জানা যাবে যে কোথায় এবং কীভাবে নিয়োগ দুর্নীতি হয়েছে। আর সিবিআইকে এই জানানোর কাজটি করতে হবে। চলতি মাসের শেষ সপ্তাহে এই মামলার ফের শুনানি হতে চলেছে।
হাইকোর্টের দাবি, ওএমআর শীটগুলির ডিজিটাল রেকর্ড সহজে মুছে ফেলা যায় না। এমনকি যদি রেকর্ডগুলি মুছে ফেলা হয় তবে ডেটা পুনরুদ্ধার করার উপায়ও রয়েছে।
Read More: ২-১ টাকা না, এত টাকা জরিমানা হল দুই আর্থিক প্রতিষ্ঠানের
এরপরেই মঙ্গলবার কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি রাজশেখর মন্থা বলেছেন যে সিবিআই যদি ওএমআর শীটগুলি থেকে নিয়োজিত প্রার্থীদের যথাযথ ডেটা পুনরুদ্ধার করতে না পারে, তাহলে ২০১৪ সালের শিক্ষকদের যোগ্যতা পরীক্ষা টেট ভিত্তিক সমস্ত নিয়োগ বাতিল করতেই হবে।
সম্প্রতি, সরকারি অনুদানপ্রাপ্ত প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রথম থেকে পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষক নিয়োগে উপর অভিযোগের মামলার শুনানি করার সময় এমনটাই নির্দেশ দিয়ে বসেছে কলকাতা হাইকোর্ট।
আর প্রয়োজনে ওএমআর শিটের প্রকৃত তথ্য খুঁজে বের করতে প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের অফিসে গিয়ে ‘ডিজিটাল ফুটপ্রিন্ট’ খুঁজে আনতে পারে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা সিবিআই।