নতুন শিক্ষাবর্ষ আসতেই মাথায় হাত উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীদের। মুখস্থ করে পরীক্ষা দেওয়ার ক্ষেত্রে টানা হল বিরাট বিধিনিষেধ। পরীক্ষার প্যাটার্ন পরিবর্তন করে বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে যে মুখস্থ করে আর পরীক্ষা দেওয়া চলবে না। খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে প্রতিটা চ্যাপ্টার পড়ে তবেই উত্তর করতে সক্ষম হবেন পরীক্ষার্থীরা।
2024-25 শিক্ষাবর্ষ থেকে থেকে সেমিস্টার পদ্ধতিতে এইচএস পরীক্ষা নেওয়া হবে। বেশ কয়েক মাস আলোচনার করে, জল্পনা-কল্পনার পরে, পশ্চিমবঙ্গ সরকার উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার জন্য সেমিস্টার পদ্ধতি অনুমোদন করেছে। অর্থাৎ বছরে এবার থেকে দুইবার নেওয়া হবে। প্রথমটি হবে নভেম্বর মাসে এবং দ্বিতীয়টি মার্চ মাসে।
কীভাবে নেওয়া হবে পরীক্ষা?
উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা পরিষদ সূত্রে খবর, চলতি বছর একাদশ শ্রেণিতে ভর্তি হতে যাওয়া শিক্ষার্থীদের জন্য উচ্চ মাধ্যমিক স্তরে সেমিস্টার পদ্ধতি চালু করা হচ্ছে। এবং তারাই সেমিস্টার পদ্ধতিতে প্রথম উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা দেবে। নতুন ব্যবস্থা অনুযায়ী, এখনকার মতো আর বছরে একবার দ্বাদশ শ্রেণির বোর্ড পরীক্ষা আর অনুষ্ঠিত হবে না। বরং পরীক্ষা হবে দুই সেমিস্টারের মাধ্যমে। আর ওই দুই সেমিস্টারের ফলাফলের ভিত্তিতে পরীক্ষার্থীর রেজাল্ট তৈরি করা হবে।
Read More: উচ্চ মাধ্যমিকের রেজাল্ট মে মাসে কি বেরোবে? তারিখ, অফিসিয়াল ওয়েবসাইট কী?
পরীক্ষা কবে কবে নেওয়া হবে?
শিক্ষা কাউন্সিলের নির্দেশিকা অনুসারে, 2024 সালে 11 শ্রেণীতে ভর্তি হওয়া শিক্ষার্থীদের থেকেই নতুন সিস্টেম চালু করা হচ্ছে। এই শিক্ষার্থীরাই 2025-26 শিক্ষাবর্ষে সেমিস্টার পদ্ধতিতে উচ্চ মাধ্যমিক পড়বে। অর্থাৎ শেষ সেমিস্টার পরীক্ষা হবে 2025 সালে। আর চলতি বছরের নভেম্বর মাসে একাদশ শ্রেণির প্রথম সেমিস্টার পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। দ্বিতীয়টি 2025 সালের মার্চ মাসে অনুষ্ঠিত হবে। একইভাবে, উচ্চ মাধ্যমিকের প্রথম ও দ্বিতীয় সেমিস্টারের পরীক্ষা যথাক্রমে নভেম্বর 2025 এবং মার্চ 2026-এ অনুষ্ঠিত হবে।
ভাষাতেও দেওয়া হবে জোর?
ভবিষ্যতে যেকোনও সরকারি চাকরির পরীক্ষায় যাতে কোনও অসুবিধা না হয় তার জন্য পরীক্ষার ভাষা বিষয়েও জোর দিতে চায় শিক্ষা দফতর। তাই নবম, দশম, একাদশ, দ্বাদশ শ্রেণীর পড়ুয়াদের দেশীয় ভাষা সহ দুই থেকে তিনটি ভাষা অবশ্যই পড়তে হবে।
মুখস্থ করে কেন পরীক্ষা দেওয়া যাবে না?
প্রথম সেমিস্টারের পরীক্ষা হবে সম্পূর্ণ MCQ ভিত্তিক। পরীক্ষার্থীরা ওএমআর শিটে পরীক্ষা দেবেন। দ্বিতীয় সেমিস্টারের পরীক্ষা হবে সংক্ষিপ্ত উত্তর এবং বর্ণনামূলক প্রশ্নের উপর ভিত্তি করে। প্রার্থীরা একটি সাদা নোটবুকে প্রশ্নের উত্তর লিখবেন। উভয় সেমিস্টারের ফলাফল একত্রিত করে প্রার্থীদের সামগ্রিক মূল্যায়ন করা হবে। এইভাবেই বেড়িয়ে আসবে পড়ুয়াদের বোর্ড পরীক্ষার রেজাল্ট।
Read More: রাজ্যের আদালতে গ্রুপ-D চাকরি! মাসে বেতন ১৭ হাজার টাকা, অষ্টম শ্রেনি পাশে চাকরি
মনে রাখবেন, একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণীর বেশিরভাগ প্রশ্নই থাকবে জ্ঞানভিত্তিক। কতটা বুঝে পরীক্ষা দিচ্ছেন পরীক্ষার্থীরা। তা বোঝা যাবে এইভাবে। মুখস্থ করে উত্তর দেওয়ার প্রশ্ন অর্থাৎ ডেস্ক্রিপটিভ প্রশ্ন কমিয়ে বাড়ানো হবে বিশ্লেষক ভিত্তিক প্রশ্ন।
50 শতাংশই হবে MCQ, উৎসভিত্তিক, কেস স্টাডি ভিত্তিক প্রশ্ন। আসলে ভবিষ্যতে যাতে যেকোনও কম্পিটেটিভ পরীক্ষায় মুখস্থ বিদ্যা ছেড়ে বই খুঁটিয়ে পড়ে নিজেদের ভাবনা থেকে সঠিক উত্তর দিতে লক্ষ্য অর্জন করতে পারেন পড়ুয়ারা। সেই জন্যই এমন ব্যবস্থা করা হয়েছে।