দুর্নীতি বিরোধী লড়াইয়ের প্রতীক হয়ে উঠেছেন কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। রাজ্যের নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় তাঁর একের পর এক রায় ইতিমধ্যেই বাংলার গণ্ডি ছাড়িয়ে সারা দেশে সাড়া ফেলেছে। তা নিয়ে বিতর্কও হয়েছে যথেষ্ট। তবে বাংলার মানুষের কাছে ভয়াবহ নিয়োগ দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়াইয়ের অন্যতম প্রাণপুরুষ হিসেবে স্বীকৃতি পাচ্ছেন এই বিচারপতি।
তাঁর একের পর এক রায় মানুষের মনে এই বিশ্বাস তৈরি করেছে যে অন্যায় করলে বড় বড় নেতা-মন্ত্রীরাও শাস্তি পেতে বাধ্য। কিন্তু সেই বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়’ই এবার দুর্নীতির অভিযোগ তুলে দায়ের হওয়া একটি মামলা খারিজ করে দিলেন! স্বাভাবিকভাবেই বিষয়টি নিয়ে আলোচনা শুরু হয়েছে।
মাস খানেক আগে নিয়োগ প্রক্রিয়ায় অনিয়ম ও প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের রিক্রুটমেন্ট বোর্ডে ভয়াবহ কারচুপির ঘটনায় ২০১৬ সালে প্রাথমিক শিক্ষক পদে চাকরি পাওয়াদের মধ্যে থেকে প্রায় ৩২ হাজার জনের চাকরি বাতিল করে এযাবৎ কালের মধ্যে সবচেয়ে নজিরবিহীন রায়টি দিয়েছিলেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়।
তিনি নির্দেশ দিয়েছিলেন, আগামী চার মাস ওই ৩২ হাজার প্রাথমিক শিক্ষক প্যারা টিচার হিসেবে চাকরি করবেন। ফলে তাঁরা এই সময়কালে পূর্ণ বেতন পাবেন না। বদলে প্যারা টিচারদের পে স্কেল অনুযায়ী প্রতি মাসে টাকা পাবেন। ২০১৪ সালের টেট পরীক্ষার ভিত্তিতে এই যে শিক্ষকদের নিয়োগ করা হয়েছিল, সেই নিয়োগ প্রক্রিয়া নতুন করে করার নির্দেশ দেন প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদকে।
বিচারপতি এও জানিয়ে দেন, কেবলমাত্র যারা প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত শিক্ষক তারা এই নিয়োগ প্রক্রিয়ায় অংশ নিতে পারবেন। এর মধ্যে যারা নির্দিষ্ট গাইডলাইন মেনে নিয়োগ প্রক্রিয়ায় পাশ করবেন তাঁদের চাকরি বহাল থাকবে। আর যারা সেই যোগ্যতা মান পেরোতে পারবেন না সেই শিক্ষকদের চাকরি বাতিল করতে হবে।
৩২ হাজার জনকে প্যারা টিচারদের মত বেতন দেওয়া নিয়ে রায় ঘোষনা
বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় তাঁর এই চাঞ্চল্যকর রায় দিতে গিয়ে জানিয়েছিলেন, ২০১৬ সালে যে ৪২ হাজার জনকে প্রাথমিক শিক্ষক পদে নিয়োগ করা হয়েছিল তার মধ্যে প্রায় ৩২ হাজার জনের কোনও প্রশিক্ষণ ছিল না। এমনকি বাধ্যতামূলক হলেও ইন্টারভিউয়ে এই চাকরিপ্রার্থীদের অ্যাপটিটিউড টেস্ট (Aptitude Test) নেওয়া হয়নি। যদিও প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ চাকরি খারিজ যাওয়া শিক্ষকদের পাশেই দাঁড়ায়।
বিষয়টি নিয়ে প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ ও চাকরি চলে যাওয়া শিক্ষকদের একাংশ আদালতের দ্বারস্থ হয়। সেখানে আদালতের বিচারপতিরা বিচারক অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের রায় আংশিক বহাল রাখেন। আদালত জানিয়ে দেয়, নতুন করে নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে হবে। সেখানে যারা যোগ্য বলে বিবেচিত হবেন কেবলমাত্র তাঁদেরই চাকরি থাকবে। তবে এর মধ্যবর্তী সময়কালে প্যারা টিচার হিসেবে চাকরি করা বা বেতন পাওয়ার বিষয়টি খারিজ করে দেয়। জানায় যতক্ষণ না একজন শিক্ষক অযোগ্য বলে প্রমাণিত হচ্ছেন ততক্ষণ তাঁর বেতন বন্ধ করে দেওয়া বা কমিয়ে দেওয়া চলবে না।
এরই মধ্যে কলকাতা হাইকোর্টে বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের এজলাসে ২০১২ সালের প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ প্রক্রিয়ায় দুর্নীতি নিয়ে একটি মামলা দায়ের হয়। মামলাকারী অভিযোগ করেন, বাংলায় তৃণমূল কংগ্রেসের সরকার ক্ষমতায় আসার পর অন্যান্য শিক্ষক নিয়োগে যেমন দুর্নীতি হয়েছে তেমনই ২০১২ সালের টেট পরীক্ষার মাধ্যমে শিক্ষক নিয়োগেও ব্যাপক দুর্নীতি হয়েছিল। যদিও নিয়োগ প্রক্রিয়ার ১০ বছর পর মামলা দায়ের হওয়ায় তা খারিজ করে দেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়। দুর্নীতি হয়ে থাকলে এতো দেরিতে কেন আদালতের দ্বারস্থ হলেন মামলাকারী সেই নিয়ে প্রশ্ন তোলেন তিনি।
দুর্নীতির বিরুদ্ধে যিনি খড়গহস্ত সেই অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় দুর্নীতির অভিযোগে দায়ের হওয়া মামলা খারিজ করে দেওয়ায় জল্পনা শুরু হয়েছে। যদিও আইনজ্ঞ মহলের মতে, বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় সঠিক কাজই করেছেন। কারণ নিয়োগের এতোদিন পর মামলা দায়ের হলে তা নিয়ে খুব কিছু করা মুশকিল।
🔥 সরকারি চাকরি, সরকারি প্রকল্প-স্কিম, সরকারি ঘোষনা, সরকারি গুরুত্বপূর্ন আপডেট মিস করতে না চাইলে আমাদের হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে জয়েন হয়ে থাকুন।
✅ WhatsApp Group: Join Now
✅ আরো গুরুত্বপূর্ণ আপডেট
👉 এই গুরুত্বপূর্ন কাজটি না করলে পিএম কিষানের টাকা আর পাবেন না
👉 এই জুন মাসের ১০ তারিখ থেকে আরো ১০০০ টাকা পাবেন মহিলারা
👉 রাজ্যে ব্লক প্রোগ্রাম কোঅর্ডিনেটর পদে চাকরি
👉 স্কুল খোলার পরেই শিক্ষকদের জন্য এই সমস্ত বাড়তি কাজ